আকস্মিক বন্যায় সিলেটে আশ্রয়হীন লাখো মানুষ

আকস্মিক বন্যায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সিলেট নগরীরসহ ১৩ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তারা। দুর্গত এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সুরমা, কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর থাকায় পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পাহাড়ি ঢলেের পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় আশ্রয় হারিয়েছেন অনেকে। আর চুলা জ্বালানোর মতো পরিস্থিতি না থাকায় তাদের থাকতে হচ্ছে অনাহারে।

গ্রামের পাশাপাশি সিলেট নগরীতেও খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। থাকার জায়গা মিললেও, এসব জায়গাতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট।

উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টিতে জেলায় ২ লাখের বেশি মানুষ এখন পানিবন্দি। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমারে থাকায়, অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির।
আকস্মিক বন্যায় লাখো মানুষের দুর্ভোগ শুরু হলেও, দুর্গত এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা পর্যাপ্ত নয়, বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে তলিয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত। গত দু’দিনের ঢলে জেলার তিন উপজেলার ৭শ হেক্টর জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। কেউ কেউ আধাপাক ধান ঘরে তুললেও বেশিরভাগ জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হতাশ চাষিরা।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পাহাড়ি ঢলে আগাম বন্যায় হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। পানি নেমে যাওয়ার পর কোনমতে হাওরের ভেতরের অংশের ফসল ঘরে তোলে কৃষক। মাস না পেরোতেই আবারো বৃষ্টি ও উজানের ঢলে এবার ডুবছে হাওরের উচুঁ অংশের বোরো ধান।

গত দু’দিনে জেলার সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও ছাতক উপজেলার প্রায় ৭শ হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বাদাম, সবজিসহ বসতভিটারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন, সেচের পানি স্বল্পতার জেরে দেরিতে চাষাবাদ করায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আগামি চাষাবাদের সময় বিনামূল্যে সার বীজ দেয়া হবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।
চলতি বছর জেলায় ২ লক্ষ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়। এর মধ্যে হাওরের ভেতরের শতভাগ ধান কাটা গেছে। তবে হাওরের উপরাংশের ১৯ শতাংশ ধান কাটা এখনো বাকি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version