দেশের প্রথম বেসরকারি ফিল্ম সিটি

বিনোদন ডেস্ক,

 

দুই তরুণ গড়ে তুলেছেন দেশের প্রথম বেসরকারি ফিল্ম সিটি। এই সিটিতে এমন কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে যা পাওয়া যাবে না দেশের অন্য কোনো জায়গায়।

একদিকে প্রমাণ সাইজের পাশ্চাত্য ধাঁচের ভবন, আরেকপাশে কুঁড়েঘর, তার পাশেই আবার মফস্বলের উঠতি ধনাঢ্যের আধপাকা রঙচঙে বাড়ি। আরেকদিকে প্লেজার পুল, ওয়াটারফল, ওপেন এয়ার মিটিং করার মতো পার্কমতো কিছু জায়গা। আর আছে একখানা লেক।

* ** ফিল্ম ভ্যালির ভিতরে একদিন ***

 দেশের প্রথম বেসরকারি ফিল্ম সিটিতে। সঙ্গী লেখক, মিউজিশিয়ান, আলোকচিত্রী বাপ্পী খান। বাথুলী বাস স্ট্যান্ডে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ফিল্ম ভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইসমাইল হোসেন নয়ন। উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূর জামান রাজা সেদিন ঢাকার বাইরে ছিলেন বলে তার সঙ্গে দেখা হলো না ।

ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই বাঁপাশ দিয়ে নাক বরাবর একটা বড়সড়, পূর্ণাঙ্গ টেনিস কমপ্লেক্স। নয়ন জানালেন, ওটার নাম রেখেছেন প্রয়াত কিংবদন্তি লেখক হুমায়ূন আহমেদের নামে। উল্লেখ্য, ফিল্ম ভ্যালির স্টুডিওগুলোর নামকরণ করা হয়েছে বিনোদন অঙ্গনের কয়েকজন কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বের নামে।

 টেনিস কমপ্লেক্সের পাশ দিয়েই দেখলাম বয়ে গেছে মনোরম সুচিত্রা সেন সরোবর। সরোবরের স্বচ্ছ টলটলে জলে ঝকঝকে নীল আকাশের প্রতিবিম্ব পড়ে দেখার মতো দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই সরোবরে শুটিং করার জন্য আছে রঙিন ডিঙির ব্যবস্থা।

সুচিত্রা সেন সরোবরের ওপর সুদৃশ্য কাঠের সেতু। সেতু পেরিয়ে ওপারে নায়ক রাজ রাজ্জাক ফ্লোর। অনেকখানি জায়গা নিয়ে বানানো হয়েছে ফ্লোরটা। ভেতরে ঢুকে দেখলাম জায়গাটা এখন ফাঁকা।  রাজ্জাক ফ্লোরের পাশেই আমজাদ হোসেন সিটি। আধুনিক পাশ্চাত্যের শহরের ধাঁচের চোখজুড়ানো একটি কাঠামো।

গ্রামের পরই মফস্বল। মফস্বলের প্রভাবশালী ধনীদের যেরকম আধপাকা বাড়ি দেখা যায়, হুবহু সেরকম বাড়িটা। এর নাম রাখা হয়েছে আরেক কিংবদন্তি আনোয়ার হোসেনের নামে। মফস্বল ছাড়িয়ে আরেকটু ডানে এগোতেই একটা সেমি-ডুপ্লেক্স ভবন।

এরপর  কিছু চোখজুড়ানো ল্যান্ডস্কেপ। কয়েকটা অংশে বিভক্ত। ল্যান্ডস্কেপগুলোর একেকটা অংশ একেকটা ফ্রেম করে সাজানো। এখানে পাওয়া যাবে ওয়াটারফল, প্লেজার পুল, বসে থেকে ওপেন এয়ার মিটিং করার মতো পার্কের মুডে অনেকগুলো পোর্শন। পাওয়া যাবে অ্যাম্ফিথিয়েটার বা মুক্তমঞ্চও, যেখানে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের শুটও করা যায়।

ফিল্ম ভ্যালির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবকে এখানকার সবচেয়ে ইতিবাচক দিক বলে উল্লেখ করলেন প্রেমা। দেশে এরকম একটা ফিল্ম সিটির কতটুকু দরকার ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন একটা সিটি আমাদের কাজের জন্য খুব প্রয়োজন। এতে কাজের সুবিধা হয়, এক জায়গায় সব সুবিধা পাওয়া সময় বেঁচে যায়। আর সময় বেঁচে গেলে খরচটাও কমে।’ এছাড়া এখানে বাড়তি হইচই নেই বলেও কাজে সুবিধা হয় বলে জানালেন তিনি।

 *** শুরুর গল্প ***

ফিল্ম ভ্যালির অন্যতম উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন নয়ন ২০০১ সালে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন। বেশ কিছু নাটক, সিরিয়াল পরিচালনা করেছেন।

কিন্তু একসময় নয়ন বিনোদন অঙ্গন থকে বেরিয়ে এসে ফুপাত ভাই রাজার সঙ্গে মিলে ইনটেরিয়র ডিজাইনিংয়ের একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন।

রাজা পড়াশোনা করেছেন চারুকলায়। তাই ডিজাইনিংয়ের মূল কাজ তিনিই করতেন। গল্পাকারের প্রধান আর্কিটেক্ট এবিএম নাসিম জামান সম্রাট। ফিল্ম ভ্যালির ডিজাইনও তিনিই করেছেন।

নাটক নির্মাণের সময় নয়ন লক্ষ করেছিলেন দেশে সুসজ্জিত, পেশাদার কোনো শুটিং স্টুডিও নেই। অন্ধের যষ্টি একমাত্র এফডিসি। কিন্তু সেটিও সিনেমানির্ভর। সেখানে শুধু ফ্লোর আছে, অন্য কিছু নেই। আর এফডিসিতে সবাই কাজ করতেও পারে না। ছোট জায়গা, কিন্তু চাপ প্রচুর। শিডিউল পাওয়া ভীষণ কঠিন।

ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং করার সুবাদে তাদের অনেক কর্পোরেট ক্লায়েন্ট ছিল। অর্থায়নের জন্য নয়ন ও রাজা এই ক্লায়েন্টদের কাছে প্রোফাইল জমা দিতে শুরু করেন। প্রথম প্রোফাইল অনুসারে তাদের পরিকল্পনা ছিল প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপরে বড় করে ফিল্ম সিটি বানাবেন।

 

*** দশ বছরের সাধনার পর ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ল  ***

প্রজেক্ট প্রোফাইল নিয়ে নয়ন আর রাজা বিভিন্ন অর্থায়নকারীর সঙ্গে দেখা করতে আরম্ভ করেন। প্রায় দশ বছর কেটে গেল ঘোরাঘুরিতেই, কারও কাছ থেকেই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছিলেন না। তারপরও হাল ছাড়েননি তারা।

তারপর একদিন ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের কাজেই গেলেন পুরোনো ক্লায়েন্ট, ইউরো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএম হায়দারের অফিসে। এর চার বছর আগেই অবশ্য তাকে ফিল্ম সিটি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন নয়নরা। যদিও তখন তিনি সাড়া দেননি।

বাথুলী বাসস্ট্যান্ডের পাশে একটুকরো জমি কিনেছিলেন হায়দার কারখানা দেওয়ার জন্য। কিন্তু আর ওই কারখানা করা হয়নি। পরে ঠিক করেন ওখানে একটা বাংলো বাড়ি বানাবেন। সেটার জন্য ডিজাইনও করিয়েছেন।

আগের প্রস্তাব ছিল ফিল্ম সিটি করা ১০০ বিঘা জমির উপর। কিন্তু হায়দারের জমি তার প্রায় দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র। তাই তিনি বললেন, দুদিনের মধ্যে আগের প্রস্তাবটাকে কাস্টমাইজ করে জমা দিতে। তার মনে ধরলে প্রকল্পটা নিয়ে সামনে এগোবেন।

এরপর রাজা আর নয়ন রাত জেগে প্রপোজালটিকে ছোট করেন। পরদিন সকালেই হায়দারকে প্রপোজাল দেখান। হায়দার যেহেতু চলচ্চিত্র অঙ্গনের মানুষ না, তাই তার মনে কিছু প্রশ্ন ছিল। বিনিয়োগ যে করবেন, সেই লগ্নি কতটুকু ফেরত পাবেন—এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল তার মানে। তাই তাকে ধরে বিনোদন অঙ্গনের বিভিন্ন লোকেশন, সেট ঘুরে দেখিয়ে ধারণা দেওয়া হয় সেখানকার পরিবেশ কেমন, ভাড়া কেমন, দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এরকম ফিল্ম সিটির প্রয়োজন কতটুকু।

সবকিছু দেখার পরও হায়দারের দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটছিল না। তবে তিনি অর্থায়নে রাজি হন। কিন্তু সঙ্গে শর্ত জুড়ে দেন, ফিল্ম সিটি যদি সফল না হয়, তাহলে তার পুরো দায়ভার নয়ন আর রাজার।

এ প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান নয়ন ও রাজা। হায়দারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময় নেন। বলে নেন, অন্তত ছয় বছর কোনো ফিডব্যাক পাওয়া যাবে না। তবে ‘একসময় এই ইন্ডাস্ট্রিও দাঁড়িয়ে যাবে। আর ভিজুয়াল মিডিয়া বা বিনোদন ব্যবসা কখনোই ছোট হবে না। যত দিন যাবে, এই ব্যবসার পরিসর তত বাড়বে।’

কেমন চলছে দেশের প্রথম বেসরকারি ফিল্ম সিটি?

ফিল্ম ভ্যালির নির্মাণকাজ শেষ হয় করোনাকালেই। নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর নয়নরা ভাবলেন সবকিছু ফেলে রাখলে শুধু শুধু নষ্ট হবে, তাই করোনার মধ্যেই উদ্বোধন করে দেখা যাক কাজ করে কি না। তাই গত বছরের জুলাইয়েই ফিল্ম ভ্যালি উন্মুক্ত করে দেন তারা।

ফিল্ম ভ্যালির এমডি জানালেন, এখন পর্যন্ত বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছেন তারা। আর্থিকভাবে এখনও লাভবান হতে না পারলেও ফিল্ম সিটিটা চালাতে তাদেরকে অন্তত ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না। ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখবেন বলেও আশাবাদী তিনি।

ফিল্ম ভ্যালি ঢাকা থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে। আবার এখানে শুটিং করতে আসা ইউনিটগুলোর জন্য আলাদাভাবে থাকার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাই ঢাকা থেকে এসে এখানে দিনের শুটিং দিনে শেষ করা গেলেও, যাদের একটু বেশি দিনের শুটিং থাকে তাদের সমস্যা হয়ে যায়। নয়নরা লক্ষ করেছেন, প্রতিটা ইউনিটই এসে এখানে থেকে কাজ করতে চায়। তাই নয়নদের একটু অসুবিধা হয়ে যায়। তারা এর মধ্যেও ইউনিটগুলোকে থেকে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছেন। অনেকসময় তিনটি স্টুডিওতে ইউনিটগুলোর থাকার ব্যবস্থা করে একটি স্টুডিও কাজের জন্য ভাড়া দিতে হচ্ছে।

নতুন ফিল্ম সিটি চালুর পর ক্লায়েন্ট আনা কতটুকু কঠিন ছিল জানতে চাইলে নয়ন বললেন, ‘এক্ষেত্রে আমাদের খুব ভাগ্যবান বলতে পারেন। ক্লায়েন্ট টেনে নিয়ে আসার জন্য আমাদের খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি।

তিনি জানান, গত বছরের ৮ জুলাই শুটিংয়ের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর এত বেশি বুকিং আসতে থাকে যে কোরবানি ঈদের আগে তারা ইউনিটগুলোকে জায়গা দিতে পারছিলেন না।

নয়ন বলেন, ‘আমাদের এখানে ২৫-২৬ জন কর্মচারী কাজ করেন। তাদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, রক্ষণাবেক্ষণ—এসব খরচ চালানোর জন্য আমাদের এক টাকাও ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না সেই শুরু থেকেই। বাড়তি লাভের দেখা এখনও না পেলেও খরচটা তুলে আনতে পারছি।’

ফিল্ম ভ্যালি নিয়ে আশাবাদের কারণ হিসেবে নয়ন জানালেন, অধিকাংশ দিনই তাদের এখানে শুটিং থাকে। কিন্তু তিনটি ইউনিটকে কাজ করানোর মতো অবস্থায় একটি ইউনিটকে রাখতে হচ্ছে, তিনটি স্টুডিও থাকার জন্য ছেড়ে দিয়ে একটি ইউনিট ভাড়া দিতে হচ্ছে, একসঙ্গে চার-পাঁচটি স্টুডিও ভাড়া দিতে পারছেন না আবাসন ব্যবস্থার অভাবের কারণে। এ কারণে আর্থিকভাবে এখনো লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। কিন্তু প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে জানালেন নয়ন।

ফিল্ম ভ্যালি কেন অনন্য

ফিল্ম ভ্যালিতে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংই সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। এছাড়া সিনেমা, ওয়েব সিরিজ আর মিউজিক ভিডিওর শুটিংও হচ্ছে সমান তালে।

আর নাটকের যেহেতু বাজেট স্বল্পতা থাকে, তাই ঢাকা থেকে একটু দূরেই ফিল্ম সিটিতে আসতে এখনও উৎসাহ পায় না বলে জানালেন নয়ন। তারপরও মাসে চার-পাঁচটা নাটকের শুটিং এখানে হয় বলে জানালেন তিনি। তবে ওটিটি, মিউজিক ভিডিও, চলচ্চিত্রের ২০-২২ টা কাজ প্রতি মাসে ফিল্ম ভ্যালিতে হয়।

রেড রাম, ড্রাইভারের মতন দর্শকনন্দিত ওয়েব সিরিজের কিছু অংশের শুটিং হয়েছে ফিল্ম ভ্যালিতে। এছাড়া এখানে শুটিং হয়েছে মাফিয়া চলচ্চিত্রের ৮টি কিস্তির, ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’, ‘তালাশ’, ‘কাগজের বউ’সহ বেশ অনেকগুলো চলচ্চিত্রের।

‘এছাড়াও এখানে হাউস সেটআপের আরেকটা ফরমেশন আছে যেটা বাংলাদেশের আর কোথাও পাবেন না। অ্যাপার্টমেন্ট টাইপের হাউস—সালমান শাহ স্টুডিও ও জাফর ইকবাল স্টুডিও। এখানে ওপেন স্পেসে, ওয়েল-ফার্নিশড করা, যেখানে আপনি বেখানে খুশি বেড ফেলে বেডরুমের সিকোয়েন্স করতে পারবেন। আবার ডাইনিং সেটআপ রেখে ডাইনিং রুমের সিকোয়েন্সও করতে পারবেন।’

‘তাছাড়া একটি হাসপাতালের সেটআপও আছে। আমাদের কাছে প্রপস আছে; তাদের কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে অপারেশন থিয়েটার পর্যন্ত সব সেটআপ তৈরি করে নেয়া যায়। আছে অফিস সেটআপও, ইচ্ছেমতো সাজিয়ে নেয়া যায়।

‘আছে হুমায়ূন আহমেদ টেনিস কমপ্লেক্স। ফিল্ম ভ্যালি ছাড়া দেশের আর কোথাও টেনিস কমপ্লেক্সে শুটিং করার সুবিধা নেই।

‘ফিল্ম ভ্যালিতে আছে বেশ কিছু ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের ল্যান্ডস্কেপও। ল্যান্ডস্কেপগুলোর একেকটা অংশ একেকটা ফ্রেম করে সাজানো। এখানে পাওয়া যাবে ওয়াটারফল, প্লেজার পুল, বসে থেকে ওপেন এয়ার মিটিং করার মতো পার্কের মুডে অনেকগুলো পোর্শন। পাওয়া যাবে অ্যাম্ফিথিয়েটার বা মুক্তমঞ্চও, যেখানে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের শুটও করা যায়।

‘যে সেমি-ডুপ্লেক্স ভবন রয়েছে সেখানে হাসপাতালের সাইনবোর্ড লাগিয়ে হাসপাতালের শুট করা যাবে, আবার চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুটও করা যাবে।

‘তাছাড়া ঢাকার বাইরে শুটিং করতে গেলে সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটা হলো—সঙ্গে করে নিজেদের জেনারেটর বয়ে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আমাদের এখানে নিজস্ব জেনারেটর আছে; সেটা ভাড়া নিতে পারেন।’

‘উত্তরার শুটিং হাউসগুলোতে শুধু প্রপস ও বিল্ডিং পাওয়া যায়—কিন্তু এক্সটেরিয়র, ল্যান্ডস্কেপ, পার্কের মতো অন্যান্য জিনিস সেখানে পাওয়া যায় না। আউটডোর করার জন্য অন্য কোথাও যেতেই হচ্ছে।

‘কিন্তু ফিল্ম ভ্যালি একই পেরিফেরির মধ্যে ইনডোর, আউটডোর দুধরনের সুবিধাই রেখেছে। আছে প্রপসের সমৃদ্ধ সংগ্রহ, আর ফার্নিচার। পুরো আউটডোরে রেইন মেশিন আলাদা করে ভাড়া করতে হবে না। ফিল্ম ভ্যালির যেকোনো জায়গাতেই বৃষ্টির সিকোয়েন্স করার সুবিধা রাখা হয়েছে। কর্পোরেট লুকে একটা অফিসের সেটআপ আছে।

‘সাধারণত কোনো শুটিং হাউসে গেলে ওই হাউসের ঘরগুলো ও সামনের রাস্তার কিছুটা অংশে শুট করা যায়। কিন্তু সেই রাস্তায় ও আশপাশের আউটডোরে শুট করতে গেলে সেখানে মাঝেমধ্যেই উৎসাহী দর্শকদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভিড় তৈরি হয়। এতে নির্বিঘ্নে শুটিং করাটা অনেকসময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। সময়ও নষ্ট হয়। সংলাপ বলার সময় ব্যাঘাত ঘটে। ফ্রেমিংও কখনও কখনও নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ফিল্ম ভ্যালিতে এসব সমস্যার কোনোটারই মুখোমুখি হতে হয় না। কারণ পুরো এলাকাই চার দেয়ালে ঘেরা।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ডরমিটরি নির্মাণের পর তারা ক্লায়েন্টদের ফিডব্যাক নেবেন। তাদের চাহিদা ও মতামতের ভিত্তিতে আশপাশের জমি অধিগ্রহণ করে ফিল্ম ভ্যালির পরিসর আরো বাড়ানো হবে।

এছাড়া ফিল্ম ভ্যালি এখন নির্মাণের দিকেও এগোচ্ছে। ওটিটি, নাটক—সব মাধ্যমেই পা রাখতে চায় তারা। ইতিমধ্যে বেশ অনেকগুলো চিত্রনাট্যও প্রস্তুত করে ফেলা হয়েছে। এ বছরের শেষ দিকেই নির্মাণের কাজ শুরু হবে। প্রতি বছর অন্তত চার-পাঁচটি চলচ্চিত্র, দশ-পনেরোটি ওয়েব সিরিজ ও যতগুলো সম্ভব নাটক নির্মাণের ইচ্ছা আছে তাদের।

এর পাশাপাশি ফিল্ম ভ্যালিতে আরও অনেক নতুন নতুন সুবিধাও যোগ করার ইচ্ছা আছে নয়নদের। ট্রেন স্টেশন, বাস স্টেশন, হাইওয়ে, এয়ার লাইনসের ভেতরের ইনটেরিয়র, জাহাজের ভেতরের ইনটেরিয়র সেটসহ আরও অনেক সুবিধা যোগ করতে চান এখানে।

 

 

 

 

বেতনা নিউজ ২৪ /বি/ডে/

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version