আমাদের খাদ্যের ভবিষ্যৎ কী, তা অনুসন্ধানে কাজ করছেন লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ করে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্যের ক্ষতির ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বাড়ছে। ফসলহানির মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। ফলে বিশ্বজুড়ে প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম দ্রুত বাড়ছে।
লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের গবেষক স্যাম পিরিনন বলেন, ‘আমরা যেসব খাবার খাই, তার বৈচিত্র্যকরণের বিষয়টি ক্ষুধা দূর, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি মোকাবিলা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করার অন্যতম উপায়।’
বিশ্বব্যাপী ৭ হাজারের বেশি ভোজ্য উদ্ভিদের মধ্যে মাত্র ৪১৭টি ব্যাপকভাবে জন্মায়। এই উদ্ভিদগুলো খাদ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়।
পান্ডানাস
পান্ডানাস বা পান্ডানাস টেকটেরিয়াস একটি ছোট গাছ। এই গাছ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় জন্মে।
লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের রিসার্চ ফেলো মেরিবেল সোটো গোমেজ বলেন, গাছটি খরা, প্রবল বাতাস ও লবণাক্ততার মতো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সহ্য করতে পারে। মেরিবেল বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো, বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে এই গাছ জন্মাতে পারে।
ভোজ্য বীজ আমাদের অন্যতম ভবিষ্যৎ খাদ্য। এগুলো যেমন সস্তা, তেমনি এতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন রয়েছে, আছে ভিটামিন বি।
মটরশুঁটি, শিমসহ মটরজাতীয় উদ্ভিদ সমুদ্রের তীর থেকে শুরু করে পাহাড়ের ঢাল পর্যন্ত এলাকার বিস্তৃত পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সক্ষম।
বিশ্বে ২০ হাজার প্রজাতির মটরজাতীয় উদ্ভিদ আছে। কিন্তু এগুলোর মাত্র কয়েকটি প্রজাতি আমরা খাদ্যে ব্যবহার করি।
বনবাদাড়ে এখনো শত শত প্রজাতির মটরজাতীয় উদ্ভিদ রয়েছে বলে মনে করা হয়। আর এগুলো এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা রয়ে গেছে।
মোরামা বিন (টাইলোসেমা এস্কুলেন্টাম) বতসোয়ানা, নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু অংশে একটি প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এসব স্থানে এই বীজ সিদ্ধ করে খাওয়া হয় কিংবা তা পাউডারে পরিণত করা হয়। পরে তা দিয়ে জাউ জাতীয় খাবার বা কোকার মতো পানীয় তৈরি করা হয়।
সিরিয়াল
সিরিয়াল একধরনের শস্যদানা, যা ঘাস থেকে আসে। এই শস্যদানার ব্যাপক বৈচিত্র্য রয়েছে।
বিশ্বে সিরিয়াল জাতীয় ১০ হাজারের বেশি প্রজাতি রয়েছে। নতুন খাদ্যের উৎস হিসেবে এই প্রজাতিগুলোর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
ফোনিও (ডিজিটারিয়া অ্যাক্সিলিস) হলো একটি পুষ্টিকর আফ্রিকান সিরিয়াল। এটি কুসকুস (কারি), পোরিজ (জাউ) ও পানীয় জাতীয় খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। স্থানীয়ভাবে ফসল হিসেবে ফোনিও চাষ করা হয়। এই উদ্ভিদ শুষ্কাবস্থা সহ্য করতে সক্ষম।
মিছেকলা
মিছেকলা (এনসেট) সাধারণ কলার কাছাকাছি একটি প্রজাতি। এই কলা শুধু ইথিওপিয়ার একটি অংশে খাওয়া হয়।সাধারণ কলার মতো দেখতে এই ফল অভোজ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, কলার মতো দেখতে এই ফসলের খাদ্য হিসেবে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply