শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই : মির্জা ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক,

 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করান। পদত্যাগ না করলে পালানোর পথ পাবেন না।

গতকাল বুধবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, পাঁচ নেতা হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেন।

 

 

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্করের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর, এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনর রশীদসহ  প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা বলেন যে, দুর্ভিক্ষ আসছে, কম খান, বাতি কম জ্বালান, পানি কম ব্যবহার করুন। এসব কথা বলছেন এখন। আপনারা আছেন কেন? বিদায় হন। আমি আগেই বলেছি সেফ এক্সিট (নিরাপদে বিদায় নিন) করুন। নিরাপদে চলে যান। তা না হলে পালাবার পথটাও খুঁজে পাবেন না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা আপনি পদত্যাগ করুন। আজ থেকে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেই আন্দোলন আমরা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেব। সেই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারের অবশ্যই পতন ঘটাব এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

 

 

তিনি বলেন, এই সরকার বাংলাদেশের সব অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। সেজন্য আমরা বলেছি অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। আমরা বলেছি বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধায়কের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই নির্বাচন কমিশন গঠন হলে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এক করে নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হবে। সেই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠন হবে। সেই সরকার হবে জনগণের সরকার।

তিনি বলেন, আন্দোলন শুরু হয়েছে দেশকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য। এই দেশকে আরেকবার পরাজয় থেকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে শুরু করেছি গণতন্ত্রকে মুক্ত করার আন্দোলন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। আর এই আন্দোলনের সূচনা হলো চট্টগ্রাম থেকে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা শুনেছি বিদ্যুতের দাম বাড়বে। সবকিছুর দাম এই সরকার বাড়িয়েছে। সবকিছুর দাম বাড়াতে হয় কেন? কারণ একটিই। তারা লুট করে, চুরি করে ডাকাতি করে। জনগণের পকেট থেকে টাকা নিয়ে টাকা বিদেশে পাচার করে। কানাডা, লন্ডন ও মালয়েশিয়ায় বাড়ি করে। আর আমার দেশের মানুষ না খেয়ে মারা যায়। খুব বড় বড় কথা বলে। কিন্তু দেশের শতকরা ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে।

তিনি বলেন, জনগণের সরকার গঠন করা হলে আমরা সব সমস্যা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে সমাধানের চেষ্টা করব। চাল, ডাল, তেল ও বিদ্যুতের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করব। বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা করব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ দেশে কারো নিরাপত্তা নেই। দিনে দুপুরে ডাকাতি হয়। মা-মেয়েদের কোনো সম্ভ্রম রক্ষা হয় না। মানুষকে হত্যা করা হয়। খুন-গুম করা হয়। এমন এক অবস্থা এসেছে, র‌্যাবকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমি বলি র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে হবে না। নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে শেখ হাসিনার সরকারকে। কারণ হাসিনা সরকারের নির্দেশেই গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কাস্টডিতে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে এই সরকারের আমলে। তারা নাকি কিছু জানে না। বলে অনেকে লুকিয়ে আছেন।

 

বিভাগ : রাজনীতি

 

বেতনা নিউজ ২৪ /অ/ডে/

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version