অনলাইন ডেস্ক,
বৃহত্তর কুমিল্লার রাজনীতিতে একসময় যিনি ছিলেন ‘সব কিছু নিয়ন্ত্রণকারী’, সেই আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দিন এখন একেবারে বদলে গেছে। একের পর এক হাতছাড়া হচ্ছে তাঁর গড়ে তোলা সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাব। সরকারের পতনের পর আদালতের নির্দেশে জব্দ হচ্ছে তাঁর নামে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, ব্যাংক হিসাব ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
আওয়ামী লীগের তিনবারের সাবেক এমপি বাহার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থেকে দীর্ঘদিন ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনের সময় প্রার্থী নির্ধারণ, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হুমকি-ধমকি, কালো মাইক্রোবাসে করে ‘ক্যাডার বাহিনী’ পাঠানোসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
ঢাকায় বাহাউদ্দিন বাহারের একাধিক বাড়ি-ফ্ল্যাট থাকলেও বেশির ভাগ সময় তিনি থাকতেন কুমিল্লা নগরীর এ বাসায়। এখানে বসেই কুমিল্লা নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। তাঁর বাড়ি ও অফিস ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সরগরম থাকত।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বাহার, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা সীমান্তপথে ভারতে পালিয়ে গেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও নির্মাণ শ্রমিক মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘বাহারের বাড়িটি এখন পড়ে আছে ফাঁকা। এখনো প্রায় প্রতিদিন মানুষ পোড়া বাড়িটি দেখতে আসছে।
স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, সরকার পতনের পর সাবেক এমপি বাহার, তাঁর স্ত্রী ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের অপসারিত মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা সীমান্তপথে ভারতে পালিয়ে গেছেন। সোনালী স্কয়ার মার্কেটে এখনো বাহারের মালিকানায় শতাধিক দোকান রয়েছে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক আবু রায়হান অভিযোগ করেন, বাহার ও তাঁর মেয়ে সূচনার নির্দেশেই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর ন্যায়বিচার দাবি করছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়সার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাহার অবৈধভাবে টাউন হলের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে দোকান ভাড়া বাবদ বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করতেন। এখন সেই টাকা সরাসরি টাউন হলের ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা হচ্ছে।’
এখনো বাহারের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।
বেতনা নিউজ ২৪ /অ/ডে/